
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ছোট ভাইয়ের কিডনি বিক্রির চেষ্টায় ফেঁসে গেলেন বড় ভাই।
ছোট ভাই রায়হান এহসান রিহানকে (৫) অপহরণ করেন বড় ভাই ফাহাদ বিন ইহসান তারেক। অপহরণের অভিযোগে বড় ছেলের বিরদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন বাবা মো. আবু তাহের। পরে পুলিশ তারেককে গ্রেপ্তার করে।
সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পুলিশ জানায়, রিহানকে অপহরণের পর বাসায় একটি চিঠি লিখে যান বড় ভাই।
চিঠিতে তারেখ উল্লেখ করেন, ‘আমি শুধু এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। আমি যেদিন কিডনি বিক্রি করেছিলাম, ঠিক সেদিন থেকে আপনারা আমার অবহেলা করা শুরু করেছেন। অথচ আপনাদের অত্যাচারে আমি বাধ্য হয়েছি নিজের অঙ্গ বিক্রি করতে। আপনারা আমার জীবনের সব শেষ করে দিয়েছেন।’
সেখানে তিনি আরও বলেন, ‘আমার সন্তানের মুখ আজ পর্যন্ত দেখি নাই। আমার জীবন নষ্ট করে আপনারা শান্তিতে থাকবেন ভাবলেন কীভাবে? আমি এতোদিন অপেক্ষা করেছি। আপনাদের হাতে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনারা আমার কোনো ব্যবস্থা করে দেন নাই। আপনার সন্তান যেখানে বেকার সেখানে আপনারা হিন্দুর সন্তানকে ২০ লক্ষ টাকা দেন ব্যবসা করার জন্য। আপনাদের টাকা-পয়সা মানুষের জন্য। আপনাদের সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করেছি। আমার মতো এবার আপনাদের ছোট ছেলে কিডনি দেবে। আপনারা আমার ব্যবস্থা করেন নাই তাই এটা ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না। আপনারা আপনাদের টাকা-পয়সা নিয়েই থাকেন। আর মানুষের ছেলেদেরই বড় বানান। আমার কিডনি বিক্রির সময় যেমন কিছু করতে পারেন নাই। এবারও পারবেন না।’
চিঠির সূত্র ধরেই হাজীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তারেকের বাবা। পরে কৌশলে তারেককে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসেন। পরে হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ তারেককে গ্রেপ্তার করেন।
তারেকের মা ফরিদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে আগে থেকেই মাদক সেবন করতো। নেশার কারণে সে অনেক টাকা নষ্ট করেছে। তাই আমরা তাকে টাকা দিতে সাহস করিনি।’
তারেক বলেন, ‘আমি আমার ছোট ভাইকে অপহরণ করেছি শুধু টাকার জন্য। কিডনি বিক্রির কথাটি চিঠিতে লিখে মা-বাবাকে ভয় দেখিয়েছিলাম। তারা আমাকে বাধ্য করেছেন এমন ঘটনা ঘটাতে।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোশারফ বলেন, ‘সোমবার অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে এবং অপহৃত রিহানও আমাদের জিম্মায় রয়েছে। মঙ্গলবার অপহরণকারীকে আদালতে পাঠানো হবে।’
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ | ৩১ |