ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জগন্নাথপুরে জ্বিনের বাদশাসহ গ্রেফতার ৩, ১৫ শ কোটি টাকা উদ্ধার

উপজেলার প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী মাওলানা এমরান আহমদকে ১৫শ কোটি টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় জ্বিনের বাদশা সহ তার বাবা মাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জগন্নাথপুর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে নেত্রকোনা থানা পুলিশের সহযোগিতায় জ্বিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম (২৬), তার পিতা আব্দুল কাদির (৬০) ও মা রানু বেগমকে (৫০) কে গ্রেফতার করেন। শুক্রবার গ্রেফতারকৃতদের সুনামগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।থানা পুলিশ জানায়, জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের মক্রমপুর গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী মাওলানা এমরান আহমদের সাথে ২০১৮সালে জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের এনামুল হকের মাধ্যমে পরিচয় হয় নেত্রকোনা জেলার বারহাট্রা গ্রামের হাফিজ কামরুল ইসলামের সাথে। কামরুল ইসলাম সৈয়দপুর গ্রামের লন্ডন প্রবাসী রহমত আলীর বাড়িতে ভাড়াটে বাসায় বসবাস করত। পরিচয় সুবাদে হাফিজ কামরুল ইসলাম মাওলানা এমরান আহমদকে বলেন জ্বিনদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। জ্বিনের কাছে যা তিনি চান জ্বিন তাই দেয়। একপর্যায়ে কামরুল মাওলানা এমরান আহমদকে বলেন বাড়িতে ৫টি ড্রাম ও ২টি ট্রাংক কিনে নিয়ে তালা বদ্ধ করে রাখবেন। আর চাবি থাকবে আমার কাছে (কামরুল)। এক সময় ওই ৬টি ড্রামে ১৫শ কোটি টাকা আপনি (মাওলানা এমরান আহমদ) পেয়ে যাবেন। তবে ১৫শ কোটি টাকা পেতে হলে আপনি সাড়ে ৩ কোটি টাকা আমাকে দিতে হবে। তাহলে ১৫শ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। আর এ বিষয়টি কাউকে বলতে পারবেন না। যদি বলেন তাহলে আপনার বড় ধরনের ক্ষতি হবে। প্রতারক জ্বিনের বাদশা কামরুল ইসলামের কথা বিশ্বাস করে মাওলানা এমরান আহমদ ৬টি ড্রাম তার বাড়িতে তালাবদ্ধ করে একটি কক্ষে রাখেন এবং ১৫শ কোটি টাকা পাওয়ার আশায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা জ্বিনের বাদশা কামরুল ইসলামকে দিয়ে দেন। টাকা হাতে পেয়েই জ্বিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম পালিয়ে যায়। বিষয়টি মাওলানা এমরান আহমদ জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ প্রযুক্তির সহযোগিতায় জ্বীনের বাদশা হাফিজ কামরুর ইসলাম সহ তার বাবা মাকে গ্রেফতার করেন।

জগন্নাথপুর থানার উপ-পরিদর্শক এস,আই হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য ও আসামীরা

মাওলানা এমরান আহমদ জানান- হাফিজ কামরুল ইসলাম নিজেকে জ্বিনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে জানায়। কামরুল আরো জানায়, আমার ঘরে বিভিন্ন ড্রামে ১৫শ কোটি টাকা রয়েছে। সে টাকা নিতে হলে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জ্বিনের জন্য শিরনী হিসেবে দিতে হবে। এই ফাঁদে ফেলে ১৫শ কোটি টাকা পাওয়ার আশায় বিভিন্ন কিস্তিতে জ্বিনের বাদশা কারুল ইসলাম আমার কাছ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি।

জগন্নাথপুর থানার এস আই হাবিবুর রহমান পিপিএম জানান, ব্যবসায়ী মাওলানা এমরান আহমদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুট বটতল গ্রামে অভিযান চালিয়ে জ্বিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম তার বাবা আব্দুল কাদির ও মা রেনু বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।

ওসি তদন্ত নব-গোপাল দাশ জানান, পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। এ ঘটনায় ৫টি ড্রাম ও ২টি ট্রাংক উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ড্রাম ও ট্রাংকগুলোতে কিছু ময়লা কাপড় ছোপড় পাওয়া গেছে।