ঢাকা, সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীরা প্রভাব বিস্তার করলে ব্যবস্থা: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। তবু কোনো মন্ত্রী ও এমপি (সংসদ সদস্য) ভোটে প্রভাব বিস্তার করেন কি না, তা কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি করা হবে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের অংশগ্রহণের কারণে কমিশন বেকায়দায় নেই। প্রথম দফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে, মেনে নেয়া হবে না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, প্রভাব বিস্তার রোধে কাজ করছে কমিশন। কেন্দ্রীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন মনিটর করা হবে। প্রভাব বিস্তারের সমস্যাটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে না।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটের দিন আমরা সতর্ক থাকব, কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করব। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

৪৯৫ উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৪০টি উপজেলায় ভোট হবে আগামীকাল বুধবার। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ভোট হবে ইভিএমে। বাকিগুলোতে হবে ব্যালটে। সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে বিকাল চারটা পর্যন্ত চলবে ভোট।

ইতোমধ্যে ভোটের সব ধরনের আয়োজন শেষ হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। আইনশৃঙ্খলা সঠিকভাবে তদারকিতে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন ভবনে পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় সে লক্ষ্যে বিভাগ, জেলা পর্যায়ে কমিশন মতবিনিময়ও করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও টহলের সুবিধার্থে ধাপে ধাপে ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, স্থগিত ও ধাপ পরিবর্তনের কারণে কিছু বাদ দেওয়ার পর বুধবার ১৪০টি উপজেলায় নির্বাচন হবে।

সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন আর পার্বত্য এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অন্তত ২১ জন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

সিইসি বলেন, নির্বাচনে আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সংশ্লিষ্টরা নিয়ম কানুন প্রতিপালন করলে নির্বাচনটা সহজ হবে। তারা যদি বিশৃঙ্খল তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা দুরূহ হবে। এবার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রার্থীসহ সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। নির্বাচনকে স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছি। মাঠ পর্যায়ের নানা ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান সিইসি।

স্থানীয় নির্বাচনে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উত্তেজনা বেশি থাকায় কমিশন সতর্ক রয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, স্থানীয়ভাবে এসব বেশি হয়ে থাকে। এগুলো যেন না হয় সতর্ক থাকি যাতে উত্তেজনা থেকে সংঘর্ষ, সহিংসতা না হয়।

স্থানীয় নির্বাচনে এবার দলীয়ভাবে অংশ গ্রহণ না থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি জানান, এটা কোনোভাবে নিয়ম রক্ষার ভোট নয়। নির্বাচনটা করতে হবে। তিনি বলেন, কে কোন দল করে আমরা জানি না। নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের কাজ। কে দাঁড়াল, কে দাঁড়াল না, আমাদের কাছে প্রার্থী। আমরা দেখছি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। কেউ এলো কী এলো না-তা নয়। প্রতিটি উপজেলায় অন্তত চারজন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিদ্বতা দেখতে যাচ্ছি না, প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিদ্তা হচ্ছে। অবাধ হচ্ছে কিনা তা দেখব।

এ সময় নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, ফরহাদ আহাম্মদ খান, জনসংযোগ পরিচালক শরিফুল আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।