
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হেনেছিল বাংলাদেশের উপকূলে। মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা ও পটুয়াখালীর উপকূলীয় জনপদ। কিছু বুঝতে পারার আগেই জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়েছিল বাড়িঘর, ফসলের ক্ষেত। এই ঘূর্ণিঝড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী এলাকা।
Google news
সিডর পরবর্তী সময় বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী এ উপকূলের জনজীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। উপকূলবাসীর ক্ষতি কাটাতে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে এলেও, বলেশ্বর নদীর ভাঙনের ফলে ১৬ বছরেও আতঙ্ক কাটেনি এ জনপদের মানুষের।
সিডরের ভয়াল গ্রাসে বাবা মাসহ পরিবারের মোট ৭ সদস্যকে হারিয়েছিলেন সাউথখালীর বাসিন্দা মো. আল আমিন। সেদিনের সেই ভয়াবহ ঘটনার পরবর্তী ১৬ বছর ভালো কাটেনি তার। বলেশ্বর নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে তার বসত বাড়িটিও। তার মতো আরও অনেক পরিবার আছে যারা সব হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আল আমিন বলেন, সিডরের জলোচ্ছ্বাসে সেদিন বাবা, মা, নানী, বোনের মেয়ে, ফুফু এবং দুজন ফুফাতো বোনকে হারিয়েছি। সিডরের পর বলেশ্বর নদীর ভাঙনে আমার বাড়িঘর সব চলে গেছে। সিডরের ১৬টি বছর পার হয়েছে তবুও আতঙ্কে থাকি সবসময়। আমার মতো আরও অনেকেই বাড়িঘর হারিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছে। আকাশে ঘন মেঘ দেখলে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। কখন সব ভাসিয়ে নিয়ে যায় সেই আতঙ্কে থাকি। সরকার যদি বলেশ্বর নদীর ভাঙন রোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে আমাদের আতঙ্ক কাটবে। এছাড়া অনেক পরিবার এখনও ঘরবাড়ি তৈরি করতে পারেনি। তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করা হলে আর কোনো দুঃখ থাকবে না উপকূলবাসীর।