ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে মারা গেছেন

ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে মারা গেছেন। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে রয়টার্স এ তথ্য জানায়। ৮২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন তিনি।
‘জেসাস ক্রাইস্ট, পেলে আর কোকা কোলা…।’ পৃথিবীতে এই তিনটা শব্দের প্রচার সব থেকে বেশি হয়েছিল একটা সময়। পেলে নিজেও সদর্পে সে কথা বলতেন।

তা শুনে এক জার্মান সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘মিস্টার পেলে, আপনি কি নিজেকে জেসাস ক্রাইস্ট মনে করেন নাকি?’ পেলের হাসিমাখা উত্তর, ‘তা তো বলিনি। বলেছি, জেসাস ক্রাইস্ট আর কোকা কোলার মতো আমার নামও পৃথিবীর সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে।’

এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো। যাকে বিশ্ব চেনে পেলে নামে, ফুটবল সম্রাট বলে যার সামনে মাথা নুইয়ে দেয়, সেই তিনি কি না ফুটবল ফেলে চলে গেলেন! দিয়েগো ম্যারাডোনার পর পেলে। এই শোক কাটিয়ে উঠবে কী করে ফুটবল বিশ্ব!

১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপ থেকে শুরু করাই ভাল। ব্রাজিলের সুন্দর ফুটবলের শুরু তো সেই থেকেই। যে জোগা বনিতোর সৌন্দর্য এখনও চোখে-মুখে মেখে রয়েছেন অগণিত ফুটবল পাগল মানুষ।

ব্রাজিলে সুন্দর ফুটবলকে লালন-পালন করে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পেলে-গারিঞ্চা। ফুটবল, ব্রাজিল, জোগো বনিতো সব পড়ে রইল। পেলে চলে গেলেন অন্য দেশে!

ফুটবলটাকে প্রিয়তমার মতো ভালবাসতে শিখেছিলেন পেলে। তার সঙ্গে বলের সম্পর্ক তাই রূপকথার মতো। ১৩৬৩ ম্যাচে ১২৮১টি গোল। চারটি বিশ্বকাপে (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৭০) তার সঙ্গে বলের সেই রূপকথায় মজে ছিল গোটা বিশ্ব।

৮২ বছরের পেলে চেয়েছিলেন মাঠে বসে কাতার বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখবেন। শরীর সায় দেয়নি। সেই কাতার, যেখানে ১৯৭৩ সালে প্রথমবার সান্তোসের হয়ে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। শরীরে মারণ রোগের থাবা। তার উপর হৃদযন্ত্রে সমস্যা।

সারা শরীরে বিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারদের দেওয়া অসংখ্য চোট-আঘাত তাকে দমাতে পারেনি। কিন্তু ক্যান্সারের কাছে তার কৃষ্ণাঙ্গ, সুঠাম শরীর বশ মেনে নিয়েছিল। বারকয়েক হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল পেলেকে। দুশ্চিন্তায় থাকত গোটা বিশ্ব। পেলে বারবার রোগভোগকে ড্রিবল করে ফিরে আসেন।

কিন্তু এবার জীবনের ডি-বক্সে ফাইনাল ট্যাকল-এ টাল সামলাতে পারলেন না। যে ট্যাকল ফেলে দিয়েছিল দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। সেই ট্যাকল-এ এবার পেলে! ফুটবল, জোগা বনিতো, কোকা কোলা… সব পড়ে রইল। পেলে আর জেসাস ক্রাইস্ট অমর হয়েই রইলেন কোথাও।